Wednesday, December 6, 2017

কিছু কিছু কথা

নেই ধর্ম
নেই জাত্যাভিমান।
আমরা মানুষ
সবাই সমান।
---
নেই ধর্মে
নেই সাম্প্রদায়িকতায়।
ঐক্যে আছি
আছি মানবতায়।
---
প্রসঙ্গঃ বাংলার সেলেব বুদ্ধিজীবীরা...
এক সময় কবি শিল্পী কলাকুশলী সাংবাদিক চিকিৎসক শিক্ষক বুদ্ধিজীবীরা বাম শাসনে তিতিবিরক্ত হয়ে কলকাতার রাজপথে মিছিল করেছিলেন৷ দাবি তুলেছিলেন পরিবর্তনের। আমরাও তাতে শামিল হয়েছিলাম। স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন ডান, বাম নির্বিশেষে সব ধারার, সব ধারণার মানুষ। পালাবদলের পর সেলেবদের অধিকাংশই বদলে গিয়েছেন।
আসলে বদলাননি! বেশিরভাগই রয়ে গিয়েছেন আগের মতোই। আগেও সুবিধা নিতেন বাম সরকারের কাছ থেকে। তাতে টান পড়ায় ক্ষোভে অথবা অন্য কোনও কারণে রাস্তায় নেমেছিলেন প্রতিবাদে শামিল হতে! কে বলতে পারে! এখনও তাঁরা তা-ই করছেন। প্রসাদান্ন ভোগ করছেন অন্যায় ক্ষমতার।
অতি সম্প্রতি ‘পদ্মাবতী’র হয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সওয়াল করতে দেখা গেল এদের একাংশকে। ‘তারা’-অনুগত গ্রহরাও লিখছেন ফেসবুকে।
ঠিক আছে। তাহলে ‘জুলফিকার’-এর ক্ষেত্রে তাঁদের ‘প্রতিবাদী সত্তা’ কোথায় ছুটি কাটাচ্ছিল? ছবিটা ছিল শ্রীজিতের। অভিনেতা ছিলেন প্রসেনজিৎ। তাঁরাই বা কী করছিলেন?
অন্যায়ভাবে তসলিমা’কে তাড়ানো হয়েছে বাংলা থেকে। তারক বিশ্বাসের মতো একজন সাধারণ নাগরিককে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়েছে জেল হাজতে। সনাতন দিন্দার আর্ট একজিবিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কখনও স্টেটসম্যান হাউস, কখনও খবর ৩৬৫’র অফিস ঘেরাও করা হয়েছে। তখন এঁদের ‘বিবেকের দংশন’ কোথায়, কীসে চাপা পড়েছিল?
বক্তব্য ভুল বা ঠিক, এটা কোনও বিষয়ই নয়। কারণ, ভুল বলাটাও মতপ্রকাশের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। আর কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক, তা দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কার? সেই অধিকার বা দায়িত্ব তো কারও একার হতে পারে না, তাই না? ঠিক, ভুল নিয়ে প্রত্যেকেরই মতামত জানানোর অধিকার আছে, থাকবেও। সেটা না করে, একতরফা ভাবে ছবি, বই, সিনেমা, গান, প্রদর্শনী এসব আটকে দেওয়া চরম অসভ্যতা, এটা বুঝতে তো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তা হলে?
আসলে, বুদ্ধিজীবীরা তখন ভুল করেছিলেন, এখন ঠিক করেছেন, এমন মনে হয় না। তাঁরা এখন যেটা করলেন সেটা ‘বিলম্বিত বোধোদয়’, কিংবা ‘ভুল সংশোধন’, কিংবা ‘নবচেতনার স্ফূরণ’... এসব কিচ্ছু না। তাঁরা যা করলেন, সেটা আদতে অতীতের ভুলের সম্প্রসারণ, কিংবা তার চেয়েও খারাপ কিছু। তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা ক্ষমতার সঙ্গেই আছেন এবং থাকবেন। ক্ষমতা তাঁদের যেদিকে নিয়ে যাবে, তাঁরা সেদিকে যাবেন। বুদ্ধিজীবীরা যদি বরাবর চুপ করে থাকতেন, তাহলে তাঁদের স্রেফ ‘ভিতু’, ‘স্বার্থপর’ বলে ছেড়ে দেওয়া যেত। কিন্তু তাঁরা প্রমাণ করে দিলেন, তাঁরা কেবল ভিতু ও স্বার্থপর নন, তাঁরা একই সঙ্গে ধূর্ত ও ধান্দাবাজও বটে। প্রয়োজন হলে যে কোনও রঙের পতাকা নিয়ে লড়াকু সেনার মতোই আগ্রাসী, দৃঢ়চেতা হতে ভয় পান না, পাবেন না তাঁরা, যদি এবং যদি... আরও টু পাইস বেশি ইনকাম হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
ক্ষমতার যদি আবার হাত বদল হয়, তাহলে এঁদেরও হাতবদল হবে। অবধারিত ভাবে।
মার্ক্স-এঙ্গেলস রক্ষা করুন। এঁদের ভরসায় আর কেউ যেন মাঠে না নামেন!
---

No comments:

Post a Comment